রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণ নাজিরপুর গ্রামে জেগে ওঠা সন্ধ্যা নদীর চরে পৈত্রিক ভিটেমাটি ফিরে পাওয়ার দাবীতে নদী ভাঙনের শিকার সহ্রসাধিক পরিবার মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে। ১৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান ফটকের সন্মুখে বানারীপাড়া প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে শত শত নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালণ করা হয়। দক্ষিণ নাজিরপুর গ্রাম রক্ষা ও উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক এবং বানারীপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি রাহাদ সুমনের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সলিয়াবাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মিন্টু,পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু,সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপির ব্যক্তিগত সহকারী সাজ্জাদ হোসেন,উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার মীর সাইদুর রহমান শাহজাহান,বাইশারী সৈয়দ বজলুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক ভাপরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন তালুকদার,অধ্যাপক এম এ কাইয়ুম,বানারীপাড়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক গোলাম মোর্শেদ,পৌরসভার কাউন্সিলর ইউনুস মিয়া,সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল আলম ও মশিউর রহমান কামাল,বন্দর বাজারের ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম রিপন, যুবলীগ নেতা কামরুল ইসলাম অপু,মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী খালেদা খানম প্রমুখ। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তারা এসময় দক্ষিণ নাজিরপুর গ্রামে জেগে ওঠা সন্ধ্যা নদীর চর খাস সম্পত্তি করার ষড়যন্ত্র থেকে সরে না এলে পৈত্রিক ভিটেমাটি রক্ষায় কঠোর আন্দোলনে নামার হুশিয়ারী দেন। এ বিষয়ে তারা ইউএনও ও উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) মানবিক ভূমিকা রাখার দাবী জানান। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেসক্লাব চত্বরে এসে শেষে হয়। এদিকে দক্ষিণনাজিরপুর গ্রামবাসীর পৈত্রিক ভিটেমাটি ফিরে পাওয়ার দাবীর এ আন্দোলনের সঙ্গে বানারীপাড়া প্রেসক্লাব একাত্মতা প্রকাশ করেছে। প্রসঙ্গত রাক্ষসি সন্ধ্যা নদী দক্ষিণ নাজিরপুর গ্রামের সিংহভাগ গ্রাস করে ফেলেছিলো। ওই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়,মসজিদ,ঈদগাঁহ,রাস্তাঘাট,ব্রিজ কালভার্ট,ফসলি জমি,বসতভিটা সবই নদী গ্রাস করে ফেলে। বসতভিটা ও ফসলি জমিসহ সব কিছু হারিয়ে সহ¯্রাধিক পরিবার নিঃস্ব ও রিক্ত হয়ে পড়ে। সম্পত্তি ক্রয় করে বাড়িঘর করার যাদের সঙ্গতি নেই তারা অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে সদর ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম ও পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড এবং সলিয়াবাপুর ইউনিয়নের খেজুরবাড়ি আবাসনে আবার কেউ কেউ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ও পৌরসভার অন্য ওয়ার্ডেও বসতি গড়েন।সপরিবারে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরেও চলে যান অনেকে। যাযাবর জীবনও বেছে নিয়েছেন কেউ কেউ। নদীর তীরে ছাপড়া ঘরে থেকে কোন একদিন চর জেগে উঠবে সেখানে আবার ঘরবসতি গড়ে তুলবেন এ আশায় বুক বেধে আছেন অনেকে। ভাঙনের ধারাবাহিকতায় ২৫/৩০ বছর পূর্বে সম্পূর্ন ভেঙ্গে যাওয়া এ গ্রামটি গত এক যুগ ধরে একটু একটু করে জেগে উঠতে শুরু করে। দু’টি স্কুল ও মসজিদ নতুন করে এর অদূরে অন্যের দানকৃত জমিতে গড়ে তোলা হয়। পৈত্রিক ভিটা আবার ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো। দু’একজন বালি ভরাট করে ঘর নির্মাণের প্রস্তুতিও নেয়। কিন্তু হঠাৎ করে উপজেলা ভূমি অফিস ওই সম্পত্তির খাজনা নেওয়া ও বালি ভরাট বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের স্বপ্নে ছেদ পড়ে। সন্ধ্যা নদীর তীরে জেগে ওঠা বিশাল এ চর খাস সম্পত্তি হয়ে যেতে পারে এ শঙ্কায় পড়েন তারা। অভিযোগ রয়েছে ওই সম্পত্তি খাস করে একটি ভূমিগ্রাসী চক্র ডিসিআর নিয়ে ভোগ দখলের পায়তারা করছেন। ###
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.