অনলাইন ডেস্ক: স্বাস্থ্যখাতের নানা অনিয়ম নিয়ে তীব্র বিতর্কের মধ্যে গতকাল পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
ডিবির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) গোলাম মোস্তফা রাসেলের নেতৃত্বে একটি দল আজ বুধবার (২২ জুলাউ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে জানান, জেকেজি হেলথকেয়ারকে অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে তাদের কাছ থেকে কিছু কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ডিবি কর্মকর্তারা দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যান। তারা আগে থেকে অধিদপ্তরের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া ডিজি ও বর্তমান এডিজির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
জেকেজি হেলথকেয়ারকে করোনার নমুনা সংগ্রহের অনুমোদন সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র দেখবে উল্লেখ করে তাঁদেরকে সেসব কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে বলে ডিবি।
এরপর বিকেলে একটি টিম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গিয়ে তাদের কাছ থেকে কাগজপত্র দেখে যাচাই করে। এ বিষয়ে ঘণ্টাব্যাপী তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে অর্থ নিচ্ছিল জেকেজি। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দিচ্ছিল তারা।
এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকারের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ২২ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৪ জুন প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফসহ ছয়জনকে গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তা করে পুলিশ। পরে ১২ জুলাই তাঁর স্ত্রী ড. সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডা. সাবরিনা কয়েকবার দাবি করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি জেকেজির বিষয়ে জেনেশুনেই অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি জেকেজির কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে অবগত ছিলেন।
ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করতো ৮ কর্মী
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনার নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ৪৬০ টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করে। জেকেজি হেলথকেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনার আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জব্দ করা ল্যাপটপে এর প্রমাণ মিলে। আরিফ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান, জেকেজির ৭-৮ কর্মী ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেন।
হাতিয়ে নিয়েছে ৮ কোটি টাকা
জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়া মানুষের নমুনা সংগ্রহ করতেন। প্রতি রিপোর্টে ৫-১০ হাজার টাকা নেওয়া হতো। আর বিদেশিদের কাছ থেকে নেন ১০০ ডলার। সেই হিসাবে করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্টে প্রায় ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জেকেজি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.