০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, ৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, বুধবার, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মোঃ আব্দুল কুদ্দুস আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ আমিনুল ইসলাম দামুড়হুদা বিশেষ প্রতিনিধি::-
ভারতীয় চলচিত্রে এক সময় বলিউড কাঁপানো অভিনেত্রী রানী মুখার্জি সভাবসূলভ ভালো আচরণের কারণে তিনি ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার সহ তিনি বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী হলেও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে দুনিয়ার সর্বকালের সেরা মানব বলে টুইট করলেন যা নিয়ে অনলাইন মাধ্যমে শেয়ারিং এর ধুম পড়েছে! টুইটটির জন্য ইসলাম ধর্ম অনুসারীরা অবশ্য রানীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। মুখার্জি- সম্রাট পরিবারে মা’র্চ ২১, ১৯৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করলেও সেখানে তিনি জীবন-জীবিকার জন্য চলচ্চিত্রকে বেছে নেয়ার বিষয়ে উচ্চাভিলাষী ছিলেন না। যদিও ছেলেবেলায়ই তিনি বাবার
পরিচালিত বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র বিয়ের ফুল (১৯৯৬) চলচ্চিত্রে সহ-চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে এবং পরবর্তীতে তার মায়ের সনির্বন্ধ অনুরোধে রাজা কি আয়েগি বারাত (১৯৯৭) সামাজিক নাট্য চলচ্চিত্রে মূখ্য ভূমিকায় অ’ভিনয় করেন। এরপর নিয়মিত হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮) চলচ্চিত্রে শাহরুখ খানের বিপরীতে একটি সহযোগী চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। তার কর্মজীবনের এই প্রাথমিক সাফল্যের পর, পরবর্তী তিন বছরের জন্য তার চলচ্চিত্র বক্স অফিসে দুর্বল অবস্থানে ছিল। যশ রাজ ফিল্মসের সাথিয়া (২০০২) নাট্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর তার কর্মজীবনের সাফল্য আসে। পিতা রাম মুখোপাধ্যায় একজন অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক। তার মা
কৃষ্ণা চলচ্চিত্রে গান গাইতেন। তার ভাই রাজা মুখোপাধ্যায় একজন চিত্র প্রযোজক। তার মাসি হলেন প্রখ্যাত চিত্রনায়িকা দেবশ্রী রায়। বলিউড তারকা অ’ভিনেত্রী কাজল তার স’ম্পর্কিত বোন। তিনি বিখ্যাত পরিচালক প্রযোজক যশ চোপড়া এর বড় ছেলে পরিচালক ও প্রযোজক আদিত্য চোপড়াকে বিয়ে করেন জন্ম নিয়েছিলেন একটি হিন্দু পরিবারে। জীবনের ৪৭টি বছর অতিবাহিত হওয়ার পর ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়েছেন তিনি। এরপর থেকেই উদ্যোগী হয়েছেন দ্বীনপ্রচারে।তার হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছেন প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ। আলোচিত ওই ব্যক্তি হলেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের দ্বীন মোহাম্মদ শেখ। ১৯৪২ সালে একটি হিন্দু পরিবারে জন্ম নেয়া এ ব্যক্তি
আলোকিত জীবনের খোঁজে ১৯৮৯ সালে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আসেন। জন্মগতভাবে ইসলাম সম্পর্কে ছিল তার ব্যাপক আগ্রহ। ইসলামের প্রতি এমন অনুরাগ দেখে তার মা ১৫ বছর বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন। মায়ের বিশ্বাস ছিলো বিয়ে করে ফেললে অন্য ধর্মের প্রতি তার টান কমে আসবে। কিন্তু বিয়ের পরও ইসলাম সম্পর্কে তার কৌতুহল একটুও কমেনি। তাই ইসলাম সম্পর্কে জানতে মোহাম্মদ জাগসি নামে এক মুসলিম শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন দ্বীন মোহাম্মদ। মোহাম্মদ জাগসির কাছেই নিয়মিত পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের বাণী সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন তিনি। ভাগ্যক্রমে দ্বীন মোহাম্মদ শেখের চাচাও একই মানসিকতার লোক ছিলেন। তারা দুজন এইমর্মে একমত হলেন যে তারা একে অপরকে সব কাজে সহায়তা করবেন। অতঃপর তিনি তার মেয়েদের বিয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। ইসলাম গ্রহণের পর থেকে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন দ্বীন মোহাম্মদ। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায় দ্বীন মোহাম্মাদের দাওয়াতে ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। দ্বীন মোহাম্মদ শেখ স্থানীয় আল্লাহওয়ালী জামে মসজিদের সভাপতি। তিনি অসহায় ইসলাম গ্রহণকারীদের আবাসনের জন্য প্রায় ৯ একর জায়গারও ব্যবস্থা করেছেন। যারা সেখানে বসবাস করছে। ইসলাম গ্রহণের পর দ্বীন মোহাম্মদ শেখ নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন আমি ইসলামকে ভালোবাসি।
ইসলাম গ্রহণ করার আগে পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন করতে শুরু করি। কোরআন পড়ার পর বুঝতে পারি ৩৬০ দেবতার পূজা করে আসলেও কোনোদিন আমার কোনো উপকার হয়নি। ইসলাম প্রচারের জন্য একটি মিশনারী সংস্থা খুলেছেন দ্বীন মোহাম্মদ শেখ। শুরুতে পরিবার থেকেই ইসলামের দাওয়াতি কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। পরিবারের শক্তিশালী সমর্থনই ইসলামের প্রচার কাজে তার মানসিক শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্বীন মোহাম্মদ শেখের ধর্ম প্রচারের কথা পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়লে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তার কাছে এসেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তার বাড়ির মসজিদে নও মুসলিম শিশু কিশোর নারী ও পুরুষদের জন্য রয়েছে নামাজ ও পবিত্র কোরআন শেখার ব্যবস্থা। নারী শিক্ষকদের দিয়ে নারীদের কোরআন শেখারও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। সেখানে ১৫ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে কোরআন ও নামাজ শেখানোর ব্যবস্থা রেখেছেন তিনি।