০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, রবিবার, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নিতম্ব প্রতিনিধি::-
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের তৃতীয় ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মারধরে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন- আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। এরা দুইজনেই রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জোহা হলে ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ লাকের নেতৃত্বে সোহরাবসহ ফিন্যান্স বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ২৫৪ নম্বর কক্ষে ডাকা হয়। ওই সময় আসিফ ও নাহিদ ভুক্তভোগী সোহরাবকে ল্যাপটপ চুরির বিষয়ে নানা ধরণের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। একপর্যায়ে তারা দুইজনে সোহরাবের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে রড দিয়ে মারধর শুরু করে। এতে তার মাথা ফেটে রক্ত বের হলে তারা মারধর বন্ধ করে। পরে সোহরাবের বন্ধুরা গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে সহপাঠীরা জানান, ‘মারধরে সোহরাবের বাম হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায় ভেঙে গেছে। এমনকি মাথার ১৫ জায়গায় সেলাই দেয়া লেগেছে। তার মাথা থেকে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে আপাতত এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে তার সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। তবে সম্পন্ন রিপোর্ট এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।’
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক সোহরাবের এক বন্ধু বলেন, ‘গত দুইদিন ধরেই ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় সোহরাবসহ আরও কয়েকজনকে রুমে ডেকে জেরা করে আসিফ ও নাাহিদ। কিন্তু তারা এর সাথে কোনো ধরণের সংশ্লিষ্ট না জেনেও নানা ধরণের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। এক পর্যায়ে তারা চড়াও হয়ে সোহরাবকে রড দিয়ে মারধর করে।’
তিনি আরও বলেন,‘ ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই তারা মারধর করেছে। কয়দিন আগেও হুমায়ুন কবির নাহিদ মটর সাইকেলের কাগজনিত কারণে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা করে। এতে পুলিশেল কনস্টবলও তাকে মারধর করে। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে বলে কাউকে মান্যও করে না। হলে আধিপত্য বজায় রাখতেই তারা এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে মারধর করার কারণ জানতে আসিফ ও নাহিদের সাথে ফোনে একাধিকার কল করে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুুজ্জোহা হলের প্রধ্যাক্ষ অধ্যাপক মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত করতে এবং বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে আমি হলেই আছি। আসল ঘটনা জানতে তদন্ত চলছে, এ বিষয়ে পরে জানানো হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি জরুরি কাজে ঢাকা এসেছি। তবে হল প্রধ্যাক্ষ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করেছি। এ বিষয়ে হল প্রধ্যাক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা কাজ করছেন।’
রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে এ বিষয়ে জানতে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে। এই প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত তারা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে।