১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, শনিবার, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নিউজ ডেস্ক::শনিবার রাতেই আঘাত হানবে ঘূর্নিঝড় বুলবুল। আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে শুরু করছে লোকজন। ১ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্যয় নিয়েরেছ। পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় বিশেষ পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক দরবার হলে জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসক জানান, এ পর্যন্ত মোট ৬৮৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে ১ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া জেলায় ৬৫২৫ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭৪টি মেডিকেল টিম। পটুয়াখালী শেখ হাসিনা সেনা নিবাসের ক্যাপ্টেন শিবলী জানান, সেনাবাহিনী চারটি ক্যাম্পের মাধ্যমে ৮টি উপজেলায় কাজ করবে। ইতোমধ্যে তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিশেষ সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান মোহন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হেমায়েত উদ্দিন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. গোলাম সরোয়ার ও বিআইডব্লউিটির কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে পটুয়াখালী জেলার সর্বত্র গুমোট আবহাওয়া সহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। দিনভর গুড়ি বৃষ্টির পর মধ্যরাত থেকে একটানা বর্ষণ শুরু হলেও সকাল থেকে থেমে থেমে মাঝারী ভারী বৃষ্টি চলছে।
এ দিকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারী হওয়ার পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলীয় চরাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোড় চেষ্টা করা হলেও অধিকাংশ লোকজনই আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে কিছুটা অনীহা প্রকাশ করছে। সাগর তীরবর্তী লোকজন প্রকৃতির সাথে লড়াই করতে করতে অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় অনেকেরই মধ্যে সাইক্লোন সেল্টারে একেবারে চরম পর্যায় না পৌছা পর্যন্ত যেতে অনীহার মূল কারণ।বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী থেকে বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরহালিমের বসবাসকারী ২ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো: নুরুল আমীন জানান,তাদের এলাকার লোকজন পানি,ঝড়ের সাথেই বসবাস দিনের বেলায় তাদের ভয় কম,এই কারনে লোকজন এখন সাইক্লোন সেল্টারে আসতে অনীহা প্রকাশ করছে। রাতের বেলায় লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসবে।তার এলাকায়১৬ টি সাইক্লোন সেল্টার কাম স্কুল রয়েছে,্এখন কিছু সংখ্যক লোক আশ্রয় নিয়েছে।
এ দিকে ঘূর্নিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সবচেয়ে বেশী ঝুকির মধ্যে থাকা কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: শওকত হোসেন বিশ্বাস জানান,নেওয়াপাড়া থেকে পশরবুনিয়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার ভেড়ীবাধহীন এলাকার কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ হাজার লোকের ,দীর্ঘবছর পর্যন্ত ভেড়ীবাধহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে ঐ এলাকা। এলাকায় ৯ টি সাইক্লোন সেল্টার রয়েছে, এতে সর্বোচ্চ ৭ হাজার লোক আশ্রয় নিতে পারবেন।শনিবার দুপুর ১ টা পর্যন্ত সিমীত আকারে লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন ,প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোকজন কে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার জোড় চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তিনি আশা করেন সন্ধ্যার মধ্যে সব লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসতে পারবেন।
এ দিকে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মুনিবুর রহমান জানান,কলাপাড়ার ১৫৩ টি সাইক্লোন সেল্টারে ইতোমধ্যে ১০ হাজারে বেশী লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন বাকীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জোড় চেষ্টা চলছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী রাঙ্গাবালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসফাকুর রহমান জানিয়েছেন,তার এলাকার ৫৮ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রায় তিনহাজার লোক আশ্রয় নিয়েছেন,লোকজন ইতোমধ্যে জেনেছেন সন্ধ্যার পরে ঝড় আঘাত হানতে পারে তাই তারা বিকেলের দিকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসবে।তবে এখন মাত্র ভাটা শুরু হয়েছে সন্ধ্যার দিকে পুরো ভাটা থাকবে।জোয়ারের সময় থাকলে ঝড় শুরু হলে জলোচ্ছাসের পরিমান বৃদ্ধি পায়। তখন বেশী ক্ষতি হয়। তিনি জানান আজও আগুনমুখা নদীতে এ দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়া উপক্ষো করে মাছধরারত কমপক্ষে ৫০ টি মাছ ধরা নৌকার জেলেদেরকে নদী থেকে জোড় করে উঠিয়ে দিয়েছেন তারা।