১৫ Jul ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ন, ১৯শে মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি, মঙ্গলবার, ৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোবারক হোসেন, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার বাবুপাড়া আকানন বৌদ্ধ বিহারে ১৯তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। মহালছড়ি বাবুপাড়া আকানন বৌদ্ধ বিহারের দায়ক-দায়িকাদের আয়োজনে ও পানছড়ি নালকাটা ত্রিরতœ ঐক্য পরিষদের সহযোগিতায় এই শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
৮নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৯ টায় মহালছড়ি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রবীন কুমার চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে আকুতি চাকমা ও দীপ্তি খীসার উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শুরু হয়। এরপর ভিক্ষুদের কাছ থেকে ত্রিশরণ সহ পঞ্চশীল গ্রহন ও ধর্মীয় দেশনা শ্রবণ করা হয়। পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন শান্তি জীবন চাকমা। সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে পিন্ড দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান, কঠিন চীবর দান, কল্পতরু দান, আকাশ প্রদীপ দান সহ বিবিধ দান করা হয়। এর আগে উপস্থিত ভিক্ষু সংঘকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরন করে নেয় আয়োজক কমিটি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাবুপাড়া আকানন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শাসনাপ্রিয় মহাস্থবীর, খাগড়াছড়ি কমলছড়ি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালোক থের, পানছড়ি নালকাটা আকানন জনকল্যান বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, পানছড়ি সংঘ মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ তেজজ্যোতি থের, রাংগামাটি বেতবুনিয়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ মৌদগল্যায়ন থের ও বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষসহ ভিক্ষুগণ উপস্থিত ছিলেন। মহালছড়ি উপজেলার দুর-দুরান্ত থেকে আগত শত শত ধর্মপ্রাণ দায়ক-দায়িকা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আকানন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুখময় দেওয়ান।
শেষের দিকে দায়িক-দায়িকাদের উদ্দেশ্যে উপস্থিত ভিক্ষুসংঘ স্বধর্ম দেশনা প্রদান করেন। স্বধর্ম দেশনায় ভিক্ষুরা সবাইকে বুদ্ধের প্রদর্শীত নীতি অনুসরণ করে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে সঠিক পথে চলার আহবান জানান। মহান কঠিন চীবর দানের ফল সম্পর্কে দেশনা প্রদান করেন ভিক্ষুরা।
উল্লেখ্য যে, মিগার মাতা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত হয় এই কঠিন চীবর দান। ভিক্ষুদের জন্য এক দিনের মধ্যে চীবর তৈরি করে ভিক্ষুসংঘকে দান করা হয় বলে এ দানকে কঠিন চীবর দান বলা হয়ে থাকে। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাস ব্যাপি বর্ষাবাসের পর প্রতিটি বিহারে বছর একবার এ ধর্মীয় দানানুষ্ঠান বৌদ্ধরা পালন করে থাকে।