১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, ৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, শুক্রবার, ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মনপুরার নির্জন চরপিয়ালে এক গৃহবধূকে ধর্ষণকারী চারজনকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়ার পর ওই গৃহবধূকে আবার ধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগের এক নেতা।
শনিবার মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম (৩০) এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।
চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচার বাবার বাড়ি থেকে স্পিডবোটে করে মনপুরায় শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে গৃহবধূ প্রথমে গণধর্ষণ ও পরে ছাত্রলীগ নেতার ধর্ষণের শিকার হন।
আড়াই বছরের সন্তানের সামনে তাকে গণধর্ষণ করা হয়। গণধর্ষণে অভিযুক্তরা হল বেলাল পাটোয়ারী (৩৫), মো. রাসেদ পালোয়ান (২৫), শাহীন খান (২২) ও কিরণ (২৬)।
তাদের বাড়ি দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে স্পিডবোটে মনপুরায় আসার সময় পথিমধ্যে চরপিয়ালে গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হন।
চরের মহিষ বাথানরা ঘটনাটি দেখে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানকে জানান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চরপিয়াল থেকে তাকে উদ্ধার করে মনপুরায় নিয়ে আসা হয়।
গৃহবধূ জানান, চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে মনপুরার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ না পেয়ে তিনি এক স্পিডবোটে ওঠেন। বোটে আরও দু’জন যাত্রী ওঠে।
পথিমধ্যে জনতার খালের পাড় থেকে আরও দু’জন ওঠে। একপর্যায়ে ওই যাত্রীরা স্পিডবোট চালককে চরপিয়ালে নিয়ে যেতে বাধ্য করে। সেখানে তাকে চারজন ধর্ষণ করে।
এরপর জনতার খাল থেকে স্পিডবোট নিয়ে চালক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুলের কাছে নিয়ে যান। নজরুল তখন চারজনকে মারধর করে ৩ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।
এরপর নজরুল চরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এবং এক হাজার টাকা দেয়। নাম না বলতে হুমকি দেয়। নাম বললে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ারও হুমকি দেয় নজরুল।
এ ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করে স্পিডবোটের চালক রিয়াজ জানান, গৃহবধূকে চরপিয়ালে নিয়ে চারজন গণধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাটি স্পিডবোটের মালিক নজরুলকে জানান।
কিন্তু নজরুল স্পিডবোটে করে গৃহবধূকে আবার চরপিয়ালে নিয়ে ধর্ষণ করে। চরের ভেতর ওই গৃহবধূকে নিয়ে নজরুল এক ঘণ্টা থাকে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ কাজল জানান, চরপিয়ালের গণধর্ষণের ঘটনাটি মোবাইল ফোনে মহিষ বাথানরা তাকে জানান।
ঘটনাটি মনপুরা থানার ওসিকে জানানো হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার গৃহবধূকে চর থেকে উদ্ধার করা হয়। মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষিতা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। স্পিডবোটটি জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।