অনলাইন ডেস্ক :: গণধর্ষণের পর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় জুট মিলের শ্রমিক কাজল রেখাকে। ধর্ষণের পর তার যৌনাঙ্গে ছুরি দিয়ে আঘাত করেও রক্তাক্ত করা হয়। ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদাহ গ্রামের বাসিন্দা মৃত রাম গোপাল বিশ্বাসের মেয়ে কাজল রেখা (৩২)। কাজল রেখা গত দুই বছর যাবৎ ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রাজধরপুর এলাকায় অবস্থিত প্রাইড জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। দুই সন্তানের জননী কাজল রেখা মিলের পার্শ্ববর্তী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। সন্তানেরা কাজল রেখার মায়ের কাছে থাকেন।
কাজল রেখা নসিমনে করে মিলে যাওয়া আসা করতেন। গত সোমবার (১৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে নসিমন চালক চুন্নু সিকদার ঝড়ু জানান মিলে ডিউটি আছে। কাজল রেখা তার কথা মত বাসা থেকে বের হলে নসিমন চালক ঝড়ু নসিমনে উঠিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি কলা বাগানের পাশে নসিমনটি দাঁড় করিয়ে কাজল রেখাকে নামতে বলেন। এ সময় ঝড়ু ও তার সহযোগী নাজমুল, ইসলাম, আতিয়ার মোল্লা ও নয়ন জোড়পূর্বক কাজল রেখাকে কলাবাগানে নিয়ে গণধর্ষণ করে। ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে একপর্যায়ে তারা সকলে মিলে কাজল রেখার যৌনাঙ্গে ছুরি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে কাজল রেখাকে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ কাজল রেখার মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কাজল রেখার মা কল্যানী বিশ্বাস বাদী হয়ে মধুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও জড়িত আসামিদের গ্রেফতারে মাঠে নামে পুলিশ। সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল আলম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতে থাকেন। একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও বিভিন্ন সূত্র ধরে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে নসিমন চালক চুন্নু সিকদার ঝড়ুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নসিমন চালক চুন্নু সিকদার ঝড়ুকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কাজল রেখাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং পুলিশের কাছে মূল ঘটনার বর্ণনা দেন। ঝড়ুর দেয়া তথ্যানুসারে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নাজমুল (৩২), ইসলাম (৩২) ও আতিয়ার মোল্লাকে (৪২) গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের সবার বাড়ি পশ্চিম আড়পাড়া এলাকায়। নাছির খান নয়ন (৪০) নামে আরেক আসামি পলাতক রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, আতিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ আগস্ট ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রাজধরপুর এলাকায় অবস্থিত প্রাইড জুট মিলের নারী শ্রমিক কাজল রেখার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পশ্চিম আড়পাড়ার একটি কলা বাগান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.