০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন, ৪ঠা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ২২শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুই হাজার ৭৬৮টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বুধবার গণভবনে নতুন এমপিওপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা ঘোষণা করবেন। বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা ইতিমধ্যে অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গত সপ্তাহে এ তালিকা অনুমোদন দিয়েছেন তিনি। ঘোষণার পরপরই প্রজ্ঞাপন জারি করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত করা হয় এক হাজার ছয়শ’র মতো প্রতিষ্ঠান। ওই তালিকাটি প্রথমে দৈনিক শিক্ষাডটকমে এবং পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। তবে, এবার একটু ব্যতিক্রম হচ্ছে। এবার সুখবরটি ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: সোহরাব হোসাইন উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে এমপিওভুক্তি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ২টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ মতবিনিময় ও মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় পত্রিকা দৈনিক শিক্ষার সম্পাদক ও এডুকেশন রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান খানসহ প্রায় ত্রিশটি বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদককে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সম্পাদকদের মধ্যে প্রথম আলা, সমকাল, ইত্তেফাক, ডেইলিস্টার, জনকন্ঠ, ভোরের কাগজ, সংবাদ, কালেরকন্ঠ ও নিউ এইজ রয়েছেন।
একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে নিশ্চিত করেছে, এমপিওর জন্য অনুমোদন পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় এক হাজার ৬৫১টি স্কুল ও কলেজ আছে। মাদ্রাসা আছে ৫৫৭টি, ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান ১৭৭টি, কৃষি প্রতিষ্ঠান ৬২টি এবং এইচএসসি বিএম প্রতিষ্ঠান ২৮৩টি।
আর্থিক সংকটের কারণে শেষের ২৮৩টি বাদ দেয়া হয়েছিল। পরে অর্থের সংস্থান করে এমপিওভুক্তির তালিকায় আনা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা বলেন, আগামীকাল বেলা ১১টায় নতুন এমপিও পাওয়া প্রতিষ্ঠানের নাম ও তালিকা প্রকাশ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ উপলক্ষে আজ দুপুর ২টায় এ বিষয়ে দৈনিক শিক্ষার সম্পাদকসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক ও শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
জানা গেছে, স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্তির একটি তালিকা অনুমোদনের জন্য কয়েক দফায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু প্রতিবারই তালিকায় নানাভাবে ভুলভ্রান্তি করা হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে।
ওই শাখার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সাবেক পিএস ছিলেন। মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ কাজকে বিঘ্নিত করতে ইচ্ছাকৃতভাবেই ওই কর্মকর্তা বারবার ভুল করেছেন।
এ কারণে চলতি মাসের শুরুর দিকে ওই কর্মকর্তার কাছে ভুলের বিষয়ে কৈফিয়ত চেয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্তারা।
যদিও ওই কর্মকর্তা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। সর্বশেষ ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের জুনে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। এরপর এমপিওভুক্তির দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন হয়েছে।
কিন্তু সরকার নতুন প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দিতে পারেনি। সেই হিসেবে প্রায় সাড়ে নয় বছর পর ফের নন-এমপিও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছেন।
এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ীই এবারের এই এমপিও দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
রোববার রাতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের নেতারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসলে তাদের এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু শিক্ষক নেতারা বলছেন, নীতিমালা অসঙ্গতিপূর্ণ। তারা এ তালিকা প্রকাশ স্থগিত রাখার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।
নেতারা মন্ত্রীকে বলেন, নীতিমালা সংশোধন করতে হবে। সংশোধন না করে এমপিও দেয়া যাবে না। আর যদি এমপিও দিতেই হয় তাহলে স্বীকৃতিই একমাত্র মানদণ্ড ধরে শুধু স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে।
এই তারা এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় সোমবার তারা প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের দাবি করছেন।
ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুনির্দিষ্ট তারিখ না পেলে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা। তবে, অনশনে অংশগ্রহণের জন্য লোক পাচ্ছেন না তারা।