০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, ১লা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, সোমবার, ১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রাথমিক শিক্ষিকা মাকে খুন করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুই মেয়ের বিরুদ্ধে। বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে ওই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধারের পর বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য সুষ্টি হয়। অভিযোগ মাকে হত্যায় মেয়েদের সাহায্য করেছে তাদের প্রেমিক।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়ার পাঁচপুকুর এলাকায়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শনিবার সকালে এলাকার একটি পুকুর থেকে কল্পনা দে সরকার রায় (৫৫) নামে ওই স্কুলশিক্ষিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই উত্তেজিত বাসিন্দারা বাড়িতে ঢুকে তার দুই মেয়েকে মারধর শুরু করেন। রায়গঞ্জ থানার পুলিশ পৌঁছে দু’জনকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, রায়গঞ্জের পূর্ব কলেজপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা কল্পনাদেবী মহা অষ্টমীর দিন থেকে নিখোঁজ ছিলেন। কিন্তু তার দুই মেয়ে কাউকে কিছু জানায়নি বলে অভিযোগ। রায়গঞ্জ থানায় কোনও মিসিং ডায়েরিও করেনি। শনিবার সকালে গোয়ালপাড়ার পাতপুকুরে কল্পনাদেবীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, দুই মেয়ে ওই শিক্ষিকার উপর চরম শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। কল্পনাদেবী স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার জন্য কাউন্সিলর তাকে পরামর্শও দিয়েছিলেন। কিন্তু মা হয়ে মেয়েদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি তিনি।
জানা যায়, দেড় বছর আগে স্থানীয় একটি ছেলের সঙ্গে শিক্ষিকার এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। বিয়ের জন্য চাপ তৈরি দিতে থাকেন প্রেমিক। তবে মেয়ের প্রেমিককে পছন্দ না হওয়ায় বিয়েতে বাধা দেন মা। আর এতে তাতেই মায়ের সঙ্গে মনোমালিন্য তৈরি হয় মেয়ের। ওই নারীর বড় মেয়ের বন্ধুবান্ধবরা প্রায়ই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। তাতেও আপত্তি ছিল মায়ের।
মনোমালিন্যের জেরে শুক্রবার রাতে প্রেমিকের পরামর্শে বড় মেয়ে মাথা থেঁতলে খুন করে মাকে। এরপর বস্তার মধ্যে মরদেহ ঢুকিয়ে বাইকে চড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মেয়ের প্রেমিক। বস্তা থেকে বের করে দেহ রাস্তায় ফেলে দেয়।
তবে দুই বোন জানায়, তাদের মা মামাবাড়িতে গেছে বলে ভেবেছিল তারা। কারণ মাঝেমধ্যেই কাউকে না বলে মামারবাড়িতে যেত তাদের মা। অশান্তির কথাও অস্বীকার করেছে তারা। গোটা বিষয়টিই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।