১৯ মার্চ ২০২৫, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, ১৮ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, বুধবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অনলাইন ডেস্ক ॥ শেরপুরে নালিতাবাড়ীতে নিজের শয়নকক্ষ আমিরুল ইসলাম (৫০) নামে এক বিএনপি নেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি স্থানীয় গড়কান্দা মহল্লার মকরব আলীর ছেলে। নালিতাবাড়ী শহর বিএনপির নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। বুধবার রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই বৃহস্পতিবার দুপুরে গড়কান্দা কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ধারণা, এক সময়ের স্বচ্ছল এই বিএনপি নেতা বর্তমানে হাতে তেমন টাকা পয়সা না থাকার কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিন সন্তানের জনক আমিনুল ইসলাম এক সময় পৈত্রিক সূত্রে বেশ সম্পদশালী ছিলেন। কিন্তু তেমন কোনো কাজ না করে সেই সম্পত্তি বিক্রি করতে থাকেন। একপর্যায়ে সম্পত্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি হতাশায় ভুগতে থাকেন। এ জন্য বেশিরভাগ সময় তিনি ঘুমের বড়ি খেতেন। বুধবার রাতে তিনি প্রায় ২৮টি ঘুমের বড়ি খান এবং স্ত্রী ও মেয়েদের বকাবকি করে ঘর থেকে বের করে দেন। পরে তার (আমিরুলের) মায়ের ঘরে আশ্রয় নেন তারা (স্ত্রী ও মেয়েরা) । রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমিরুলের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে স্ত্রী ঘরে ঢুকে ধর্নার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
স্ত্রী জোসনা বেগম বলেন, আমাদের ভাতের অভাব ছিল না। তবে আগে অনেক সম্পত্তি ছিল। সব বিক্রি করে ফেলায় আমার স্বামী সবসময় হতাশায় থাকতেন। তিনি শুধু টাকা টাকা করতেন। এর আগেও তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
নালিতাবাড়ী শহর বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমিরুলের মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখজনক। মূলত হতাশা থেকেই তার মৃত্যু হয়েছে। মা, স্ত্রী, তিন সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে আর্থিক দৈন্যতায় তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। শহর বিএনপির নতুন কমিটিতে তিনি দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাছির আহমেদ বাদল বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পরিবারের লোজনের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেয়েছি, একসময় তাদের অনেক সহায়-সম্পত্তি ছিল। কিন্তু সেগুলো বিক্রি করে ফেলার পর থেকে আমিরুল হতাশায় ভুগছিলেন। এ কারণেই গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। পরিবারের পক্ষ থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের আবেদন করা হয়েছিল। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনুমোদন দেয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।